ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যাঃ হত্যার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।
স্টাফ রিপোর্টারঃ জেলায় শেখ রবিউল ইসলাম রবি (৪২) নামে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তিনি জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। শনিবার রাত ১০টার দিকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া ওয়াপদার মোড়ে তাকে গুলি করা হয়। রবি হত্যা মামলায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হত্যার কারণও এখন উদঘাটন করা যায়নি। হত্যার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। এদিকে চেয়ারম্যান রবিকে হারিয়ে শোকাতুর হয়ে পড়েছে শরফপুরের মানুষ। রোববার সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রবির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। রবির লাশ দেখতে গ্রামের কয়েকশ’ মানুষ ভিড় করেন। সবার চোখেই ছিল পানি। কান্নাজড়িত কন্ঠে অনেককে বলতে শোনা যায়, রবির কোনো শত্রু ছিল না। কেন হত্যা করা হলো চেয়ারম্যান রবিকে? স্থানীয়রা জানান, ছাত্রলীগের হাত ধরে রাজনীতিতে হাতে খড়ি রবির। তিনি শরফপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সর্বশেষ ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। ৪২ বছর বয়সের মধ্যে পরপর তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। শেষ দুবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনবারের চেয়ারম্যান হলেও খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন রবিউল। তাঁর বাড়ি শরফপুর ইউনিয়নের ভুলবাড়িয়া গ্রামে। তবে পরিবার নিয়ে থাকতেন খুলনা নগরের নিরালা আবাসিক এলাকায়। তাঁর স্ত্রী সমাজসেবা অধিদপ্তর খুলনায় চাকরি করেন। ৮ ও দেড় বছরের দুটি ছেলে আছেন তাঁদের। রবিউল দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে ষষ্ঠ। ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের হত্যাকাণ্ড জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। একসময়ের আতঙ্কের উপজেলা হিসেবে পরিচিত হলেও গত প্রায় ২২ বছরে এ ধরনের কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। ওই সময় যাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতেন, তাঁরা এখন ছদ্মবেশে এলাকায় আছেন। পরিবারের লোকজন বলেন, রবিউল ইসলাম মোটরসাইকেলে করে একাই চলাফেরা করতেন। প্রতিদিন সকালে ডুমুরিয়ায় নিজের এলাকায় যেতেন আর রাতে খুলনায় ফিরে আসতেন। গতকালও রাত ১০টার দিকে ডুমুরিয়া থেকে খুলনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলেন রবিউল। গুটুদিয়ার ওয়াপদা বাঁধের কাছে আসার পর সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যান। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত কুমার সাহা বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। প্রথমে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় কবলিত হয়েছেন বলে প্রচার করা হয়। পরে তার শরীরে সাতটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়। খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল বলেন, যেহেতু কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই, তাই কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।