প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে উত্তর সুতালড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে টেন্ডার ছাড়াই পুরাতন ৫ কক্ষ বিশিষ্ট কাঠের শ্রেণীকক্ষ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । এ নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
জানাগেছে, বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৯৪ সালে। শিক্ষক মন্ডলির পদ রয়েছে ৯টি। মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ২৩০ জন। সরেজমিনে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে ২৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী কাগজে কলমে থাকলেও উপস্থিত পাওয়া গেছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ১৫ জন, ৭ম শ্রেনীতে ১১ জন, ৮ম শ্রেনীতে ১৭ জন, ৯ম শ্রেনীতে ১৪ জন ও ১০ শ্রেনীতে ৪ জন মোট ৬১ জন।
অভিযোগে জানাগেছে, বিদ্যালয়টি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ২০২১ সালে একটি নতুন ভবন নির্মাণ হয়। এ ভবন নির্মাণের পূর্বে টিনশেড কাঠের ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি শ্রেণীকক্ষ ছিল। সেই শ্রেণীকক্ষটি স্থানীয় বাসিন্দা জিয়ার হাওলাদারের কাছে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। বাকি কাঠের ঘরটি তারই যোগসাজশে যে যেভাবে পারছে বিক্রি করে দিয়ে টাকা পকেটস্ত করেছে। তবে, প্রধান শিক্ষক কোন রেজুলেশনের কপি বা মাধ্যমিক অফিসার এর কাছে বিক্রির অবহিতকরণ এর লিখিত কাগজ দেখাতে পারেনি সংবাদকর্মীদের কাছে। রেজুলেশন হয়েছে পরে দেখানো হবে বলে প্রধান শিক্ষক জানিয়ে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসিন্দা বলেন, প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম, তার পছন্দমত সহকারী শিক্ষকরা মিলে কাঠের ঘরটি বিক্রি করে দিয়েছেন। কথা হয় উত্তর সুতালড়ী গ্রামের বাসিন্দা মাসুম শেখ, দাতা সদস্য এমদাদুল হাওলাদার, আকাশ মিস্ত্রী, সবুজ কুমার হাওলাদার তারা বলেন, উত্তর সুতালড়ী বিদ্যালয়ে একটি কাঠের ঘর ছিলো সে ঘরটি সরকারিভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়নি। টেন্ডার প্রক্রিয়া হলে আমরাও অংশ গ্রহন করে কিনতে পারতাম। যতটুকু জানি প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে রেজাউল ইসলাম হাওলাদারের কাছে শ্রেণীকক্ষের একটি অংশ মাত্র ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। বাকি কাঠের শ্রেণীকক্ষ কিভাবে বিক্রি করেছে আমাদের জানা নেই। তবে, কাঠের ঘরটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হইলে সরকার একটি অংশ রাজস্ব পেতো। ঘরটি লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করা যেতো। আমাদের দাবি প্রশাসন তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। লক্ষাধিক টাকার কাঠের ঘর প্রধান শিক্ষক কিভাবে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়?
রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক ও জাকির হোসেন স্যারের মাধ্যমে স্কুলের শ্রেণীকক্ষের একটি অংশ আমি ক্রয় করছি ৪ হাজার টাকায়। আরও অনেকে কিনছে পুরাতন কাঠ ও টিন। বাকি অংশ কত টাকায় বিক্রি হলো কোথাও গেলো সে অর্থ তা এখনো অজানা!
এ বিষয়ে উত্তর সুতালড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, কাঠের ঘরটি নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছিলো। ঘরটি বিধস্ত হওয়ার কারনে সরকারের কাছে একটি আবেদন করি একটি ভবন পাই। কাঠের ঘরটি সরিয়ে ফেলি। টেন্ডার দেওয়ার মত সুযোগ ছিলো না। রেজুলেশন করে কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ওই সময় লিখিত আকারে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম তারেক সুলতান বলেন, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাঠের ঘর বা ভবন টেন্ডার ছাড়া বিক্রির কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ এর ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ মোঃ মিজানুর রহমান। সম্পাদকঃ আবু সালে শিমুল মোবাইলঃ ০১৯৩৯৬৬০৭৮২ প্রকাশকঃ খলিলুর রহমান সুমন। বার্তা সম্পাদকঃ কাজী রায়হান সুলতান। হাউজ নং এন আই -৮০, হাউজিং এস্টেট, রোড নং ২২৮, পৌর সুপার কিচেন মার্কেট, মেইনগেট সংলগ্ন, জিপিও ৯০০০, খালিশপুর, খুলনা।