

শামীম আহসান মল্লিক, মোড়েলগঞ্জ প্রতিনিধি :
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মুস্তাফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত। ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে শেখ মুস্তাফিজুর রহমান মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছেন।বিভিন্ন সময়ে তার দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা, দৈনিক বহুল প্রচারিত পত্রিকা,নিউজ মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলেও আওয়ামিলীগ এর সরকারের আমলে তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে সব কিছু ধামাচাপা দিতেন। ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাদের সাথে ছিলো তার বিশেষ সম্পর্ক। তার বিরুদ্ধে উপজেলার প্রধান ও সহকারী শিক্ষকেরা বিভিন্ন দুর্নীতি,অনিয়ম, অসদাচরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখি করলেও আওয়ামিলীগ এর এমপিদের সাথে লিয়াজু করে সব সামলে নিতেন। যারা তার বিরোধিতা করতেন তাদের বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করতেন। উপজেলা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মুস্তাফিজুর রহমান দুর্নীতির টাকায় করছেন বিলাসী জীবনযাপন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন এর মধ্যে দক্ষিণ টুটপাড়া ছোট খাল পাড় বায়তুশ শুরফ জামে মসজিদের কাছে রয়েছে ৬ তালা ভিতরে বাইরে টাইলস করা বিলাসবহুল বাড়ি।শেখ মুস্তাফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে উপজেলার ৩০৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ অর্ধ বছরের শিক্ষকদের টিএডিএ ভাতা ও বিদ্যালয়ের পানি বিলের সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেন।অভিযোগ প্রচারিত হলে নামমাত্র কিছু টাকা দিয়ে তিনি শিক্ষকদের বিলে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।এছাড়া মিথ্যা তথ্য হালনাগাদ করে বদলি,নিজের পছন্দের প্রার্থীকে পছন্দের বিদ্যালয়ে বদলির জন্য অন্য প্রার্থীদের বদলি বাতিল, চলতি ২০২৫ বদলিতে আন্তঃজেলা বদলির ক্ষেত্রে নিয়মানুসারে ১০% অধিক শিক্ষক অন্য উপজেলা হতে আগত হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলাটি আবেদন বহির্ভূত থাকা স্বত্বেও ২২১ নং চিপা বারইখালি সুন্দরবন সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সীমা রায় আবেদন করেন এবং টাকার বিনিময়ে ঐ উপজেলায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবেদনটি অনুমোদন করেন এবং চুয়াডাঙ্গা সদরের গোষ্ঠীবিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মনোনীত হয়।এমন অনিয়মকে নিয়ম বানিয়ে বহু শিক্ষককে তিনি বদলিতে সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ আছে। এছাড়া ১৭৯নং খালকুলিয়া পল্লীমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন খানম এবছর নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন।তার বাবার বাড়ি শরনখোলা উপজেলায়। বর্তমান কর্মস্থলের কাছেই তার বাড়ি।স্বামী কর্মস্থল মোড়েলগঞ্জ পৌরসভার ভিতরে। তাই তিনি টাকার বিনিময়ে কর্মস্থল থেকে নিজের বাড়ির মিথ্যা দূরত্ব সর্বোচ্চ ৩০+ কিলোমিটার দেখিয়ে অনুমোদন করিয়ে বদলি হয়।যা উপজেলার মধ্যে যেকোনো বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ দূরত্বকেও অতিক্রম করে। তার বর্তমান বাসা হতে বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার সর্বোচ্চ। কিন্তু শিক্ষা অফিসারকে টাকা দিলে এসব কোনো বিষয় না। শিক্ষকদের জিপিএফ এর অর্থ কৌশলে আত্মসাৎ আবার ধরা খেয়ে কয়েকজনকে ফেরত দেওয়া,২০২৩-২৪ অর্থ বছরের কয়েকটি বিদ্যালয়ের একটি স্লিপ বরাদ্দের সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করে বরাদ্দ ল্যাপস হয়ে যাওয়ার মতো নাটক সৃষ্টি। উল্লেখ্য ২৮নং আলতিবুরুজ বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৭নং সিংজোর জামুয়া সপ্রাবি,১২১নং,১৫০নং ছোলমবাড়িয়া সপ্রাবি, ২৩৫ নং উত্তর বলভদ্রপুর ত্রিপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা স্লিপ বরাদ্দ এর টাকা পায় নাই বলে স্বীকার করেন তবে ৪৭নং সিংজোর জামুয়া সপ্রাবি এর স্লিপ এর টাকা পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের হস্তক্ষেপে শিক্ষা অফিসার দিতে বাধ্য হয় , ভোট কেন্দ্র না থাকা স্বত্বেও ভোট কেন্দ্র দেখিয়ে সংস্কারের নামে অর্থ আত্মসাৎ, ক্ষুদ্র মেরামত,রুটিন মেইনটেইনেন্স থেকে কমিশন নেওয়া, সঠিক সময়ে শিক্ষকদের বেতন বোনাস দিতে না পারা, ২০২৫ সালে ২০০০০ টাকা বাজেটের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পালনে অনীহা। জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পালনের কথা থাকলেও শিক্ষা সপ্তাহের কথা জানেন না স্বয়ং মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি,যেকোনো ফাইল ফরওয়ার্ড করতে লাগে টাকা, দেনদরবার ঠিক হলেই ফাইল বা তথ্য হালনাগাদ হয় এমন বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন দপ্তরে কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং ভোরের দর্পন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে আগামী ২৫ মে ২০২৫ তারিখে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তদন্ত অনুষ্ঠিত হবে।তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুকুমার মিত্র গুঞ্জন আছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মুস্তাফিজুর রহমান বাদীদের বিভিন্ন মহল থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।বাদীদের উপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা চলছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলে বেড়াচ্ছে এসব তদন্ত দিয়ে তার কিছু কেউ করতে পারবে না।সে টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে ফেলবে।তার মধ্যে দেখা যাক তদন্ত ম্যানেজ করার অহংকার। এখন মোড়েলগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষকেরা অপেক্ষায় আছে তারা কি এই দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষা অফিসার এর হাত থেকে মুক্তি পাবে নাকি এবারো বেঁচে যাবে শিক্ষা অফিসার!