খুলনায় গ্রেপ্তার ৭৪ জন, আতঙ্কে বিএনপির নেতাকর্মীরা
খবর বিজ্ঞপ্তি ২৮ জুলাই ২০২৪,
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় গত এক সপ্তাহে ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতা এবং আন্দোলনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. আহসান হাবীব। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার কেএমপি’র এক বিজ্ঞপ্তিতে খালিশপুর এলাকা থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়।
আহসান হাবীব দাবি করেন, এই কয়েক দিনে মোট ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সবাই সহিংস আন্দোলনের উস্কানিদাতা। কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে তারা নাশকতা করেছেন।
এদিকে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ১৬ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত তাদের দলীয় অন্তত ৫৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশকেই পুরোনো নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে সম্প্রতি মহানগরীর তিনটি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের হওয়া তিনটি নতুন মামলায়ও অনেককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
খু লনার মুহসিন কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক আবু সালে শিমুল বলেন,গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খালিশপুস্থ বাসায় নগর ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়। তাকে না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করে। তিনি আরো বলেন কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়ার আগে থেকে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় অবস্থান করেন। তারপরও পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছে। আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। ওই টিমটি পরে নয়াবাটি মোড়ে বিএনপি নেতা গফুরের বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে রাতে পুলিশ ১০ নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা তপন ব্যাপারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা এলাকা ছাড়া বলে জানান তিনি।
বিএনপি’র দলীয় সূত্র জানায়, দলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থন জানানো হয়। কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়া পুলিশ এসব অহিংস কর্মসূচিতে গুলি চালিয়েছে। এখন আবার উল্টো বিভিন্ন মামলায় দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে খুলনাতে কোনো সংঘর্ষ-ভাঙচুর হয়নি। অথচ এ ঘটনাকে পুঁজি করে পুলিশ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। তৃণমূলের কর্মীদের বাসাবাড়িতে গিয়ে পুলিশ তল্লাশীর নামে হয়রানি চালাচ্ছে।’
বিএনপি নেতারা জানান, গত কয়েক দিনে নগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহীদ খান, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনসার আলী, নগর কৃষক দলের আহ্বায়ক সজীব তালুকদার, মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইসতিয়াক আহম্মেদ ইস্তি,
আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক নাজিমউদ্দীন ভূইয়া শামিম গ্রেফতার।
জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-আহ্বায়ক মির্জা মাহমুদ গ্রেপ্তার হয়েছেন। অন্যরা ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মী।
খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী জানান, আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ গ্রেপ্তার করছে আমাদের নেতাকর্মীদের। বিএনপি তো এই আন্দোলন করছে না। অথচ পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছে। জেলা বিএনপির সাত-আটজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে সবার মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা কাজ করছে।