মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রকিবুল ইসলাম বকুলের সুস্থতা কামনায় দোয়া খালিশপুর মুহসিন কলেজ ছাত্রদলের নবীন বরনের প্রস্তুতি সভা সরকারি হাজি মুহাম্মাদ মুহসিন কলেজ প্রাঙ্গণে ক্লাস ক্যাম্পিং ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ খালিশপুর মুহসিন কলেজ ছাত্রদলের আলোচনা সভা খালিশপুর মুহসিন কলেজ ছাত্রদলের আলোচনা সভা ১২নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম মাহমুদ পটার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী # বিএনপি নেতা খায়রুল ও তার স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ির দলিল পত্রসহ স্বর্ণালংকার লুট # খুলনা নগরীর খালিশপুরে দুর্বৃত্তরা জসিম নামে এক যুবককে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে যুক্তিতর্ক চলাকালে আদালতে বাদীকে হত্যা হুমকি শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষ্যে ১২ নং ওয়ার্ড বিএনপির জরুরী সভা
Headline
Wellcome to our website...
খালি পড়ে আছে বাস, হাঁটছেন যাত্রীরা
/ ১২৭ Time View
Update : বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন

খালি পড়ে আছে বাস, হাঁটছেন যাত্রীরা

আজ বুধবার (১০ জুলাই) তৃতীয় দিনের মতো চলছে কোটা আন্দোলনকারীদের ‘বাংলা ব্লকেড’। গত রবি ও সোমবার বিকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করা হলেও আজ কর্মসূচি শুরু হয় সকাল থেকেই। অবরোধের মুখে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার যান চলাচল।

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টার পর থেকেই রাস্তা অবরোধের জন্য বিভিন্ন স্থানে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব, পরীবাগ, গুলিস্তান জিরো পয়েন্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচলে বাধা দেওয়া হয়।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে বাস, নিরুপায় হয়ে নেমে হাঁটেতে শুরু করেছেন যাত্রীরা

সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো হন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা কলেজ থেকে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে এসে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে। সকালে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও সাড়ে ১০টা থেকে মিরপুর রোড স্থবির হয়ে যায়। তখন যেসব যানবাহন চলাচল করছিল সেগুলো আটকে পড়ে। পরে এসব যানবাহনের যাত্রীরা হেঁটেই রওনা করেন গন্তব্যে।

বুধবার দুপুরে দেখা যায়, নিউ মার্কেট থেকে সায়েন্স ল্যাব আসার পথে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি বাস। মিরপুর থেকে ধানমন্ডি বা ধানমন্ডি থেকে জিগাতলায় যাওয়ার রাস্তার চিত্রও এক। রাস্তায় বাস থাকলেও বাসে ড্রাইভার, হেলপার, যাত্রী কেউই নেই। যাত্রীরা কিছুটা হেঁটে কিছুটা রিকশায় করে যাচ্ছেন তাদের গন্তব্যে। আর ড্রাইভার হেলপাররা বাস থেকে নেমে বিশ্রাম নিচ্ছেন বা ঘোরাঘুরি করছেন আশপাশে। কেউ আবার ঘুম দিয়েছেন গাড়ির ভেতরেই।

সন্ধ্যার আগে কোনও যান চলবে না, তাই হাঁটা ছাড়া গন্তব্যে পৌঁছার উপায় নেই সাধারণ মানুষের
সাভার বাইপাইল থেকে সকালে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন পারভিন আক্তার। এসেছিলেন বাসেই। কিন্তু এখন ফেরার আর কোনও বাস পাচ্ছেন না। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সকালে বাসে করে শাশুড়িকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে। কিন্তু এখন যাওয়ার কিছু পাচ্ছি না। শাহবাগ থেকে এখান (সায়েন্স ল্যাব) পর্যন্ত হেঁটে এসেছি। এখন দেখি রিকশা নিয়ে কতদূর যেতে পারি। সন্ধ্যা পর্যন্ত তো আর থাকা যাবে না, ভেঙে ভেঙেই যেতে হবে।

কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি নিয়ে ধানমন্ডি ২ নম্বরে (সিটি কলেজের রোডে) বসে ছিলেন চালক সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, আমি সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বসে আছি। সন্ধ্যার আগে যেতে পারবো না। কিছু করার তো নাই বসে থাকা ছাড়া। দেরি হচ্ছে, কেন দেরি হচ্ছে সেটা কোম্পানি জানে।

অবরোধের কারণে নিশ্চল গাড়ি, হাত-পা ছড়িয়ে অবসর কাটাচ্ছেন চালক-সহকারীরা
এসময় একই রাস্তায় আরেকটি গাড়ির চালক আবু বকরের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ১২টা থেকে গাড়ি থামিয়ে বসে আছি। যেতে পারছি না। কিছু করারও নেই, মোবাইলে গান শুনছি। আন্দোলন হচ্ছে, রাস্তাঘাট বন্ধ। আন্দোলন নিয়ে আবু বকর বলেন, আমি এই আন্দোলনের পক্ষে। কোটা বাতিল করা হোক। আমার এক আত্মীয় পড়াশোনা করে একটা চাকরি পায়নি। হয়তো কোটা না থাকলে সেও চাকরি পেতো।

কলাবাগান থেকে হেঁটে সায়েন্স ল্যাব এসেছেন মনির আহমেদ। তিনি যাবেন সাতক্ষীরায়, বিকাল সাড়ে ৩টায় তার বাস। তিনি বলেন, কীভাবে যাবো বুঝতে পারছি না। বাস ঠিক সময়মতো ছাড়তে পারবে বলেও মনে হচ্ছে না। সব জায়গায় একই অবস্থা। আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মতে ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। এই কারণেই এত কষ্ট করে হেঁটে এসেও বিরক্ত লাগছে না। অন্য সময়ে জ্যামে বসে থাকলেই মেজাজ গরম হয়ে যায়।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সারি সারি যানবাহন আটকে আছে রাস্তায়
সকাল ১১টা থেকে বাস থামিয়ে বসে আছেন বিকাশ পরিবহনের চালক মো. আজিজ। তিনি বলেন, আজ হয়তো আমার রোজের টাকাটা পাবো না। কারণ আজ গাড়ি চালাতেই পারিনি। আমি তো গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি ঠিকই, আমার তো আর কোনও দোষ নাই। কিন্তু তেলের খরচের টাকাই যদি না ওঠে তাহলে তো মালিক টাকা দিবে না। গত দুদিন তাও গাড়ি চালাতে পেরেছিলাম, আজ একেবারেই পারি নাই।

আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের পুরো ব্যাপারটা আমি বুঝি না। কিন্তু সবারই দাবি থাকতে পারে, তাদেরও আছে। সরকারের উচিত তাদের দাবি মেনে নেওয়া। কারণ সরকার এর আগে গাড়িতে হাফ পাসের (অর্ধেক ভাড়া) দাবিও মেনে নিয়েছিল আন্দোলনের পর। তাহলে ওইটা মানলে এটা মানবে না কেন?

রাজধানীতে প্রায় সব প্রধান সড়কেই আজ যান চলাচল বন্ধ
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, আমরা যখন রাস্তায় গরমে ঘাম ঝরাচ্ছি তখন আপিল বিভাগ থেকে কোটার যে রায় ছিল সেটা বহাল রেখেছে। আমরা ছাত্র সমাজ আপিল বিভাগ থেকে যে রায় দিয়েছে সেই রায়কে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা বলতে চাই, ছাত্র সমাজের প্রাণের এক দফা দাবি হচ্ছে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ সবকটি জায়গায় অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে। সংবিধানের প্রতি আমরা সম্মান রেখে বলছি, সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে যৌক্তিকভাবে কোটা রেখে সংসদে আইন পাস করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত ছাত্র সমাজের এক দফা দাবি আদায় না হবে, আমরা রাজপথ থেকে ফিরে যাবো না।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page