পর্যটককে হত্যার পর বিক্ষোভকারীরা প্রধান সড়ক অবরোধ করলে এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ছবি: সংগৃহীত
কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে এক পর্যটককে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সেই ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য থানায় আনা হলেও সেখান থেকে তাকে বের করে পিটিয়ে হত্যা করে জনতা। তারপর লাশটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বার্তা সংস্থা এএফপি খবরটি দিয়েছে।
সোয়াতের একটি পুলিশ সূত্র এএফপিকে বলেছে যে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খাইবার পাখতুনখোয়ার সোয়াত জেলার মাদিয়ানে স্থানীয়রা এক ব্যক্তিকে আটক করে। তাদের অভিযোগ ছিল, ওই ব্যক্তি কোরআন পুড়িয়েছে। পুলিশ হস্তক্ষেপ করে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় থানায় নিয়ে যায়। নিহত ব্যক্তি মাদিয়ান এলাকার নন।
কিন্তু মসজিদ থেকে লাউডস্পিকারে স্থানীয়দের বাইরে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেওয়ার পর জনতা থানায় এসে ঢিল ছুড়তে থাকে। সূত্রটি বলেছে, বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ বাতাসে সতর্কতামূলক গুলি চালায়—যা জনতাকে আরও উত্তেজিত করে তোলে। পরে জনতা পুলিশকে পরাস্ত করে লোকটিকে টেনে নিয়ে যায় এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।
এরপর কয়েকজন এসে সেই ব্যক্তির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
একজন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন যে, পর্যটককে হত্যা করার পর উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে পাথর ছুড়তে শুরু করে। এতে পুলিশ তাদের স্টেশন ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। বিক্ষোভকারীরা প্রধান সড়ক অবরোধ করলে এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার সাজা মৃত্যুদণ্ড। এ রকম অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা দেশটিতে প্রায়ই ঘটে থাকে। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
গত মে মাসেও পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে কোরআন পোড়ানোর অভিযোগে এক খ্রিষ্টানের ওপর হামলা করেছিল বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর জখম হয়ে পরে সেই ব্যক্তি পরে মারা যান।
এ ছাড়াও পাঞ্জাবে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোরআন অবমাননার অভিযোগে এক মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল উত্তেজিত জনতা।