প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বেড়েছে টেন্ডার দাখিলের শেষ সময় ১১ জুলাই
স্টাফ রিপোর্টারঃ মূল প্রকল্পের মেয়াদ শেষের দিকে শুরু হতে যাচ্ছে খুলনায় আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। অনেক চেষ্টার ফসল এই কসাইখানা প্রকল্প। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১শ’ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের শেষদিকে ‘লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এলডিডিপি)’ শীর্ষক পাঁচ বছরমেয়াদি প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়। নানা কারণে খুলনার রাজবাঁধ এলাকায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের কাজই শিগগিরই শুরু হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা ও নানা অনুমতি পেতে বিলম্ব হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নও বিলম্বিত হয়েছে। গত বছর অক্টোবরে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে ১০০ শতক (এক একর) জায়গা বুঝিয়ে দেয়। কেসিসি সূত্র জানায়, আধুনিক কসাইখানায় প্রতিদিন ১শ’ গরু জবাই ও বিক্রি উপযোগী করা যাবে। পশু জবাই করবেন প্রশিক্ষিত ইমাম। এরপর যন্ত্রের মাধ্যমে চামড়া, নাড়িভুঁড়ি আলাদা করে দেহটি চার ভাগ করে বিক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করবে আধুনিক যন্ত্র। কসাইখানায় পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আইসোলেশন, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও রক্ত ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট শৃঙ্খলা থাকবে। ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে অর্থাৎ হালালভাবে পশু জবাই, প্রয়োজনে জবাই করা পশুর মাংস ফ্রিজিং, পশুর রক্তকে পোলট্রি ফিডে রূপান্তর করা এবং অন্যান্য বর্জ্য শতভাগ রিসাইক্লিং ও ইটিপি করা হবে। এ ছাড়া পশুর নাড়িভুঁড়ি, শিংসহ যেগুলো ফেলে দেওয়া হয়, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সেগুলোও বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। পাশাপাশি নগরবাসী মানসম্পন্ন ও হালাল মাংস পাবে, পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকবে এবং খুরারোগসহ গবাদিপশুর নানা সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। তবে নির্ধারিত সময় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে না পারায় প্রকল্পের সময় বেড়েছে ২০২৫ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত। যা শেষ করার কথা ছিল চলতি বছর ৩১ ডিসেম্বর। ওই সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৩ কোটি টাকা। যা এখন বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় ১শ’ কোটি টাকা। অর্থ্যাৎ ব্যয় বাড়লো প্রায় ১৭ কোটি টাকা। কেসিসির ভেটেরিনারি অফিসার ড. পেরু গোপাল বিশ্বাস জানান, বর্তমানে স্বাস্থ্যসম্মত মাংস পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া যত্রতত্র পশু জবাইয়ের কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। তাই প্রকল্পটি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গ্রাহকের কাছে মাংস সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তিনি জানান, এখানে জবাইয়ের পর হাতের স্পর্শ ছাড়াই পশুর মাংস প্রক্রিয়াজাত করা হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা, পশুর বিশ্রামাগার, জবাইয়ের আগে-পরে পরীক্ষণ কক্ষসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে। সে জন্যই সিটি করপোরেশন ইতিমধ্যে জমি বুঝিয়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি। ওই কর্মকর্তা জানান, গত বছর অক্টোবর মাসে রাজধানীর খামারবাড়ি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে খুলনা সিটি করপোরেশন ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আঃ খালেক ও প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুর রহিম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। এ প্রকল্পে তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৩ কোটি টাকা। যার ব্যয় এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১শ’ কোটি টাকা। অনেক কস্ট আর ধৈর্য্য আজ প্রকল্প আলোর মুখ দেখছে। যখন প্রকল্পটি বাতিল হতে যাবে ঠিক তখনই মেয়র ও প্রানী সম্পদ বিভাগের জোর তৎপরতায় রক্ষা পেল এ প্রকল্পটি। মেয়র এ প্রকল্পের ব্যাপারে প্রতি মাসে ঢাকায় খোঁজখবর রাখতে বলেতেন। তিনি সেভাবে যোগাযোগ রাখতে গিয়ে ঢাকার কর্মকর্তারা অনেকটা বিরক্ত বোধ করতো। এ প্রকল্প তাদের সকলের অনেক কস্টের ফসল বলে তিনি মনে করেন। অবশেষে আহবান করা হয়েছে টেন্ডার। এটা বড়ই খুশির খবর বলে মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নিরাপদ মাংস ও মাংসজাত পণ্য চামড়া পাবো। সকলের সহযোগিতা পেলে মাংস বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব বলে তিনি জানান। তিনি জানান, বর্তমানে কেসিসির দু’টি কসাইখানা রয়েছে। একটি খালিশপুর নিউমার্কেটে অপরটি গল্লামারিতে। এখানে সনাতন পদ্ধতিতে পশু জবাই করা হয়। এ প্রকল্পের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার পার্থ প্রদীপ সরকার বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ইস্যু দেখতে হয়। বিভিন্ন দপ্তরের অনুমোদন লাগে। এ ছাড়া করোনার কারণে বিশ্বব্যাংক কাজ করতে পারেনি। এসব কারণে মূলত প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়েছে। সর্বশেষ ডিজাইন বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হয়। সেটির অনুমোদন নিয়ে নানা সংকট সৃষ্টি হয়। সেই সংকট থেকে রেবিয়ে এসে ডিজাইন অনুমোদন সাপেক্ষে দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ৬ জুন’২৪ টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। আগামী ১১ জুলাই টেন্ডার দাখিলের শেষ দিন। তবে প্রকল্পের টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে প্রকল্পে। ডিপিবি সংশোধন করে প্রকল
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ মোঃ মিজানুর রহমান। সম্পাদকঃ আবু সালে শিমুল মোবাইলঃ ০১৯৩৯৬৬০৭৮২ প্রকাশকঃ খলিলুর রহমান সুমন। বার্তা সম্পাদকঃ কাজী রায়হান সুলতান। হাউজ নং এন আই -৮০, হাউজিং এস্টেট, রোড নং ২২৮, পৌর সুপার কিচেন মার্কেট, মেইনগেট সংলগ্ন, জিপিও ৯০০০, খালিশপুর, খুলনা।